বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করে তার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন।
ব্রিটিশ দূত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৮:৩০ টায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গুলশান বাসভবন ‘ফিরোজা’-এ গিয়ে ফুলের তোড়া দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান।
২০১৮ সালে হাসপাতালে ভর্তি ও কারাবাসের পর এই প্রথমবারের মতো তিনি খালেদার সাথে দেখা করেন।
হাই কমিশনারকে খালেদার চিকিৎসার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক এএফএম সিদ্দিক এবং চেয়ারপার্সনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী তাবিথ আউয়াল স্বাগত জানান।
কুক বিএনপি নেত্রীর সাথে বিভিন্ন বিষয়ে এক ঘণ্টার আলোচনা করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী পরে সাংবাদিকদের এই বৈঠক সম্পর্কে অবহিত করেন।
খসরু বলেন: “কূটনৈতিক মহলে [খালেদা জিয়ার] স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ ছিল। সবাই তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে চাইছিল।
“তারা প্রথমেই জানতে চায় ম্যাডাম কেমন আছেন, তিনি ভালো আছেন কিনা। তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিনা। তারা এই বিষয়গুলো আলোচনা করেন।”
“দ্বিতীয় বিষয়টি ছিল এই পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ কোন দিকে যাচ্ছে, আমরা কোথায় যাচ্ছি,” তিনি যোগ করেন।
খসরুর মতে, খালেদা এবং কুক বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক সম্পর্কেও আলোচনা করেন।
“তারা ম্যাডামকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক সম্পর্কে বলেন এবং তাদের ভাবনা শেয়ার করেন। তারা ম্যাডামকে বলেন যুক্তরাজ্য কীভাবে বাংলাদেশে সমস্যার সমাধান করতে এবং দুই দেশের সম্পর্ক উন্নত করতে চায়। ম্যাডাম তাদের সাথে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক মজবুত করার বিষয়ে কথা বলেন।”
খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বয়সজনিত সমস্যাগুলোর পাশাপাশি লিভারের সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগ, আর্থ্রাইটিস, কিডনির সমস্যা এবং ডায়াবেটিসে ভুগছেন।
দুর্নীতির দুটি মামলায় খালাস পাওয়া বিএনপি চেয়ারপার্সন, হাসপাতালে এক মাসেরও বেশি সময় কাটানোর পর ২১ আগস্ট বাড়ি ফিরে আসেন।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ব্রিটিশ দূতের সাথে সাক্ষাতের পর তারা এখন তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জাহিদ বলেন: “আমরা তার দীর্ঘ যাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছি। মেডিকেল বোর্ড বলেছে তাকে যুক্তরাজ্যে নিতে ৮ থেকে ১৩ ঘন্টা অথবা যুক্তরাষ্ট্রে গেলে ১৮ থেকে ২১ ঘন্টা লাগবে। এই যাত্রায় শারীরিক সক্ষমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
“আমরা যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করেছি। তিনি ভ্রমণে সক্ষম হলেই আমরা তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি বিবেচনা করব।”
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জেল হয়েছিলেন। তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় কারাগারে ছিলেন।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকার খালেদার সাজা স্থগিত করে তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্তি দেয়। তারপর থেকে, তার মুক্তির সময়সীমা প্রতি ছয় মাস অন্তর বাড়ানো হয়েছে।
৭ আগস্ট খালেদা কারাগার থেকে মুক্তি পান, একটি গণঅভ্যুত্থানে তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর।